Site icon Jamuna Television

একজন ওবায়দুল কাদের ও ক্যাপশনের বার্তা

ফাইল ছবি।

ছবির সাথে ক্যাপশন, পরিষ্কার বার্তা দেয়ার দারুণ অনুষঙ্গ। তবে ক্যাপশন আর ছবির মাঝে সামঞ্জস্যতা না থাকলে তৈরি হয় বিভ্রান্তি। একগুচ্ছ মনোরম ছবির সাথে মানানসই ক্যাপশন দিতে একদমই ভুল করেন না সেতুমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

মন্ত্রীর ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা যায় বাহারি পোশাকে ‘মনোমুগ্ধকর’ নানা ছবি। সাথে আকর্ষণীয় নানা ক্যাপশন। সবশেষ ২৩ জানুয়ারি ৩০টি ছবির সাথে তিনি ইংরেজি ক্যাপশন দিয়েছেন, যার বাংলা দাঁড়ায় ‘মচকে গেছি তবে ভেঙে যাইনি।’ জীবন বারবার থমকে যাবে, তার মানে এই নয় সেখানেই সব শেষ হয়ে গিয়েছে। আবার নতুন করে শুরু করার শাশ্বত এক বার্তা লক্ষণীয় এখানে।

গত ২১ তারিখ আরও ২০টি ছবি দেন ওবায়দুল কাদের। ক্যাপশনে লিখেছিলেন ‘ভালোবাসা ছাড়া জীবন হয় না।’ সাদা পাঞ্জাবির সাথে মুজিবকোট আর বুকের ওপরে প্রাণের দলের প্রতীক ‘নৌকার লোগো’। বিভিন্ন ভঙ্গিতে তোলা সেই ছবিগুলোতে দেখা যায়- সেতুমন্ত্রী কোথাও লিখছেন, কোথাও বা বুকশেলফের মাঝে খুঁজে ফিরছেন পছন্দের বইটি। আবার কোন ছবিতে হয়তো তাকিয়ে আছেন নির্লিপ্ত ভঙ্গিমায়। মুখে এক চিলতে পরিচিত হাসি, এক টুকরো শান্তির আভাস।

এর ঠিক একদিন আগে, গত ২০ তারিখে মাত্র ১১টি ছবিতে মন্ত্রী দিলেন মহতী এক পরামর্শ- ‘আপনার শত্রুদের ক্ষমা করুন কিন্তু তাদের ভুলে যাবেন না।’

তিনি যেন ক্ষমার চর্চা গড়ে তোলার স্পষ্ট বার্তাই দিতে চাইলেন। তবে সেই সাথে শত্রু-মিত্র চিনে রাখার আবশ্যিকতার দিকটিও তুলে ধরলেন। কমপ্লিট স্যুটের সাথে ফুলের বাগানে তোলা ছবিগুলো যেন ক্ষমাশীল মানুষের প্রশান্তির দিকটিই তুলে ধরার প্রয়াস। অন্তত, তার অনুসারীদের অনেকে সেই আভাসই খুঁজে পেলেন। ছবিগুলোর নিচে নানা ইতিবাচক কমেন্ট লক্ষ্য করা গেছে।

এরকম অনেক ছবির মাঝে কাদের সচেতনতামূলক ও মজার ক্যাপশন ব্যবহার করে থাকেন। তন্মধ্যে- ‘অবাঞ্ছিত হওয়ার অনভূতি সবচেয়ে ভয়ানক দারিদ্রতা, ব্যথা ছাড়া কিছু অর্জন করা যায় না, আমাদের শক্তি হলো একমাত্র ভয়, আর ভয়ই হলো প্রাপ্তি, ব্যথা ছাড়া শান্তি পাওয়া যায় না, বিশ্বাস ছাড়া ভালোবাসা অর্থহীন, একজন নেতাকে অবশ্যই একজন ভালো পাঠক হতে হবে, রাজনীতি হল সম্ভাব্য একটি শিল্প, বেঁচে থাকা দরকার তাদের যারা মরতে ভয় পায় না ইত্যাদি।

গুচ্ছ গুচ্ছ ছবির সাথে বাহারি ক্যাপশন; কেউ কেউ একে নেতিবাচকভাবে নিলেও মন্ত্রীর প্রোফাইলে দেখা গেছে প্রসংশায় পঞ্চমুখ ভক্তকুলের অজস্র মন্তব্য। সুধীজনে যখন কহেন, দিনশেষে ভালো থাকাটাই তো মুখ্য; তখন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ফেসবুকে ভালো থাকার বার্তাই দিচ্ছেন বারংবার।

নানা মতবিরোধ থাকলেও অনেকে যুক্তি দিয়েছেন, ছবি তুললে মন ভালো থাকে, প্রশান্ত থাকে। ছবি তোলার পরে সেগুলো দেখলে নিজের মাঝে নাকি এক উপলব্ধিবোধ কাজ করে। ঠিক আয়নায় নিজেকে দেখে যেমন মানুষ নিজের প্রেমে পড়ে যায় কিংবা ধিক্কার দেয়; ছবিও সেই কাজটাই করে। মন প্রশান্ত করা ছবির সাথে প্রাসঙ্গিক ক্যাপশন মানুষকে নানা উপলদ্ধির মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে পারে। সে চেষ্টাটিই হয়তো করছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

Exit mobile version