Site icon Jamuna Television

কসবায় মাদরাসা ছাত্রী ধর্ষণ, তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রদানের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ইমাম কর্তৃক মাদরাসা ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় ছাত্রীর বাবা আবদুল মোতালিম পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছেন।

মামলার বাদি আবদুল মোতালিম বলেন, পিবিআই প্রভাবিত হয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়ে আমার নির্যাতিতা কন্যা ও আমার পরিবারকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে।

জানা যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার বিশারা বাড়ী গ্রামের মসজিদের ইমাম মাওলানা ওবায়দুল্লাহ (৫০) ওই গ্রামের এক মাদরাসা ছাত্রীকে আরবি পড়ানোর অজুহাতে ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর তাকে ও তার মা বাবাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ফলে ওই মাদরাসা ছাত্রী প্রায় ৪/৫ মাসের অন্ত:স্বত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি ওই ছাত্রী ওবায়দুল্লাহকে জানালে গত বছরের ২৩ জুলাই ওবায়দুল্লাহ মিথ্যা কথা বলে অন্তঃস্বত্বা ওই ছাত্রীকে দুটি গর্ভপাতের ট্যাবলেট খাওয়ায়। এতে ওই ছাত্রীর প্রসব ব্যথা শুরু হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নার্সকে দিয়ে তার একটি মৃত সন্তান প্রসব হয়। ঘটনা জানাজানি হলে পরে গ্রাম্য সালিস বসে। সালিশের পূর্বেই কতিপয় নেতৃস্থানীয় লোকজন ইমামকে গোপনে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে এবং ধর্ষিতার পরিবারকে সমাজচ্যুত করে।

বাদী এই বিষয়ে কসবা থানায় অভিযোগ দিলেও তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই জিহাদ দেওয়ানের সময় ক্ষেপণের কারণে নিরুপায় হয়ে ধর্ষিতার পিতা ব্রাহ্মণবাড়িয়া (কসবা) আদালতে গত বছরের ৯ আগস্ট মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে। মামলা তদন্ত করেন পিবিআই এর এস.আই ফরিদুল আলম। পিবিআই চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

মামলার বাদির মামলার আবদুল বাদী মোতালিম অভিযোগ করে বলেন বিজ্ঞ আদালত ধর্ষিতার ২২ ধারা জবানবন্দী রেকর্ড করে এবং ডাক্তারি পরীক্ষা করায়। ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেলেও পিবিআই তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই ফরিদুল আলম প্রভাবিত হয়ে মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে মিথ্যা তথ্য সংবলিত প্রতিবেদন দেন বিজ্ঞ আদালতে। তদন্ত কর্মকর্তা বিজ্ঞ আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়ে আমাকে ন্যায় বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত করেছেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান তিনি ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় তদন্ত রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে মামলাটি সরাসরি আমলে নেয়ার জন্য বিজ্ঞ আদালতের নিকট আবেদন জানিয়েছেন।

এই ব্যাপারে মহিলা পরিষদের আইনজীবী এ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন জানান আমরা এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছি। অনাস্থার প্রেক্ষিতে ১৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য করেছেন বিজ্ঞ আদালত।

এই বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কথা বলতে ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর উপ-পরিদর্শক (এস.আই) ফরিদুল আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Exit mobile version