Site icon Jamuna Television

২ ঘণ্টার জমজমাট লড়াই জিতে শেষ আটে ইতালি

ইউরোপের ফুটবলে কোনো দলকেই যে নিপাট সেরা বলে ঘোষণা দিয়ে ফেলার সুযোগ নেই তার প্রমাণ মিললো আবারও। লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ঠান্ডা রাতে ইতালির ঘাম ঝড়িয়ে তুলনামূলক দুর্বল অস্ট্রিয়া যেন এই বার্তাই দিয়ে গেলো। ইতালিকে শেষ আটের জন্য খেলতে হয়েছে ১২০ মিনিট। গোল করতে পারেনি ইতালির মূল একাদশের কেউ। দুই বদলি খেলোয়াড়ের অতিরিক্ত সময়ের গোলে জিততে হয়েছে ম্যাচ।

ইউরো ২০২০ এর শেষ ষোলোর এই ম্যাচে খেলার শুরু থেকেই ভয়ডরহীন ফুটবল খেলা শুরু করে অস্ট্রিয়া। ইতালির টানা ১১৬৮ মিনিট গোল হজম না করা রক্ষণে ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটেই বেশ কয়েকবার ঢুকে পড়ে অস্ট্রিয়া। এমন প্রেসিং ফুটবলে কিছুটা হয়তো আশ্চর্যও হয়েছিলো ইতালি। নিজেদের গুছিয়ে নিতে খানিকটা সময় নিয়ে তারাও আক্রমণ শুরু করে।

প্রথমার্ধের খেলায় বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে দুই দলই। ম্যাচের ১৭ মিনিটে দারুণ এক সেভ করে অস্ট্রিয়ার জাল বাঁচান গোলকিপার ড্যানিয়েল ব্যাকমেন। প্রথম ৪৫ মিনিট দুই দলই আক্রমণ করে গেছে। তবে ডি বক্সে ঢুকে কেউ আর কাজের কাজ করতে পারেনি।

ম্য়াচের ৫১ মিনিটে ফ্রি-কিক পায় অস্ট্রিয়া। কিন্তু, দাভিদ আলাবার সেই কিক গোলপোস্টের ওপর দিয়ে গ্যালারিতে গিয়ে পড়ে। দ্বিতীয়ার্ধে তাক লাগানো ফুটবল খেলে অস্ট্রিয়া। ম্যাচের ফেভারিট ইতালিকে একের পর এক আক্রমণে নাস্তানাবুদ করে তোলে তারা। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম কোয়ার্টারে নিজেদের জাল সামলেই পার করতে হয়েছে ইতালিকে। অলস সময় পার করেছেন অস্ট্রিয়ার গোলরক্ষক বাকম্যান। ইতালির রক্ষণে দারুণ এক ঝড় তোলেন অস্ট্রিয়ার আর্নাউতোভিচ। দাভিদ আলাবার বাম দিক থেকে সাজানো আক্রমণের পর হাওয়ায় ভাসানো দারুণ ক্রস থেকে জালে বল জড়ান আর্নাউতোভিচ। কিন্তু, বিধিমাম! রেফারির বাঁশি, পতাকা তুলেছেন লাইনম্যান। অফসাইডে বাতিল হয় সেই গোল।

ডাগআউটে বসা আজুরি বস রবার্তো মানচিনির কপালের ভাঁজ তখন ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছিলো। আজুরিরা সুযোগ তৈরি করেও গোল করতে পারছিল না। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা গোল ছাড়াই শেষ করে দুই দল।

অতিরিক্ত সময়ে রবার্তো মানচিনি তার নীল সৈনিকদের কী বার্তা দিলেন তা তিনিই ভাল জানবেন। মাঠে নেমে দারুণ আক্রমণ সাজালো ইতালি। ফলও পেলো হাতেনাতে। ম্যাচের ৯৫ মিনিটে স্পিনাজ্জোলার উঁচু পাস হেড দিয়ে নামিয়ে বাম পায়ের অনবদ্য শটে গোল করলেন বদলি হিসেবে নামা ফেডেরিকো চিয়েসা। এর খানিক পরেই ইতালির হয়ে আরেক গোল করেন ৬৭ মিনিটে নিকোলো ব্যারেলার বদলে মাঠে নামা পেসিনা। মানচিনির এই দুই পরিবর্তনেই ম্যাচের লাগাম হাতে নেয় ইতালি।

দুই গোলে পিছিয়ে মরিয়া হয়ে আক্রমণ শুরু করে অস্ট্রিয়া। আক্রমণ সফলও হয়। ম্যাচের ১১৪ মিনিটে অস্ট্রিয়ার হয়ে গোল করেন সাসা কালাজদিচ।

এরপর আর কোনো ভুল করেনি ইতালি। শেষপর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়ে শেষ আটে নাম লেখায় রবার্তো মানচিনির শিষ্যরা।

Exit mobile version