Site icon Jamuna Television

‘জ্বিনের বাদশা’ স্বামী-স্ত্রী হাতিয়ে নিয়েছে ৭৪ লাখ টাকা, অবশেষে গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর:

জ্বিনের বদৌলতে অল্প সময়ের মধ্যে কোটি কোটি টাকা অর্জনের লোভ দেখিয়ে ৭৪ লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে রংপুর মহানগর ও জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সবুজ মিয়া ওরফে সবুজ মেম্বার এবং তার স্ত্রী পারভীন বেগম।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি এর রংপুরের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আতাউর রহমান জানান, রংপুর মহানগরীর পশ্চিম বাবুখাঁর ব্যবসায়ী মামুনুর রহমান বাদী হয়ে গত বছরের জুলাই মাসে মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানায় অর্থ আত্মসাতের একটি মামলা করেন। মামলায় ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন মনা ইলেকট্রনিক্স নামে শাপলা চত্বরে তার একটি দোকান আছে। ২০০৫ সালে সবুজ মিয়া ওরফে সবুজ মেম্বার ও পারভীন বেগমের সঙ্গে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুযোগে সবুজ মিয়া নিজেকে জ্বিনের বাদশা হিসেবে পরিচয় দেয়। এ সময় প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রকৃত নাম, ঠিকানা ও পরিচয় গোপন রাখেন তারা।

সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হওয়াসহ অল্পদিনের মধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার প্রলোভন দেখান। তাকে ইউএস ডলার, প্রাচীন ধাতব মুদ্রা, স্বর্ণমূর্তি, মূল্যবান পাথরের মূর্তি সংগ্রহ করে দেয়ার আশ্বাস দেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে শত শত কোটি ডলারের মালিক হবার সঙ্গে সঙ্গে তা ব্যাংকে জমা হবে। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বস্তায় করে তারা মামুনুর রহমানকে বাড়িতে পৌঁছিয়ে দেবেন। এসব কথার ফাঁদে ফেলে মামুনুর রহমানকে দিয়ে ব্যাংক হিসাব চালু করে তার কাছ থেকে স্বাক্ষর করা চেকবই হাতিয়ে নেন এই প্রতারক দম্পতি।

সিআইডির তথ্য, প্রতারকদের কথায় জমিজমা বিক্রয় করে সবুজ ও পারভীন দম্পতিকে কয়েক দফায় ৭৪ লাখ টাকা দেন মামুনুর রহমান। দীর্ঘদিন ধরে ঘটনাটি চেপে রাখলেও গত বছর ২৭ জুলাই রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানায় প্রতারণার বিষয়টি তুলে ধরে ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে অর্থ আত্মসাতের মামলা করেন। পলাতক এ দুই আসামিকে শনিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে গ্রেফতার করে সিআইডি পুলিশ। বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, জ্বিনের বাদশার একটি সংঘবদ্ধ চক্র রংপুর অঞ্চলে সক্রিয়। তারা এভাবে সহজ সরল মানুষকে টার্গেট করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এর ভিত্তিতে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Exit mobile version