Site icon Jamuna Television

ঢালিউডের ‘ড্রিম গার্ল’ ববিতার জন্মদিন আজ, উদযাপন করছেন কানাডায়

তাকে বলা হয় ঢালিউডের ড্রিম গার্ল। অনেকেই ভালোবেসে ডাকেন মিস লঙ্কা নামেও। তার পুরো নাম ফরিদা আক্তার পপি। যাকে সবাই ববিতা নামেই চেনে। ১৯৫৩ সালে বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা নিজামুদ্দীন আতাউব ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং মাতা বি. জে. আরা ছিলেন একজন চিকিৎসক। তিন বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে বড়বোন সুচন্দা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও ছোটবোন গুলশান আখতার চম্পা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান অভিনেত্রী।

নির্মাতা জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসাবে ১৯৬৮ সালে অভিষেক হয় ববিতার। সেখানে তিনি নায়ক রাজ রাজ্জাক ও অভিনেত্রী সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। পরে ফরিদা আক্তার পপি থেকে ‘ববিতা’ হয় ওঠেন জহির রায়হানের উর্দূ সিনেমা ‘জ্বলতে সুরুজ কি নিচে’র মাধ্যমে।

নায়িকা হিসেবে ববিতার প্রথম সিনেমা ‘শেষ পর্যন্ত’। এটি মুক্তি পায় ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট। যেদিন ববিতার মা মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এরপর অভিনয়ে নায়িকা হিসেবে শাসন করেন ৭০ দশক। অর্জন করেন তুমুল জনপ্রিয়তা। বাণিজ্যিক সিনেমার অন্যতম সফল নায়িকা হিসেবে গণ্য করা হয় ববিতাকে। কেননা গ্রামীণ মেয়ের চরিত্রে কিংবা শহরের মডার্ন তরুণী, সব চরিত্রেই তিনি সমান দক্ষতা দেখিয়েছেন।

জহির রায়হান পরিচালিত ‘টাকা আনা পাই’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ববিতার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরলেও তার জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র বলা হয় ‘অশনি সংকেত’কে। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় এই সিনেমায় অভিনয় করে ববিতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও দারুণ প্রশংসা অর্জন করেন।

ক্যারিয়ারে প্রায় ২৫০টির বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ববিতা। এর মধ্যে ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি, ‘আলোর মিছিল’, ‘ডুমুরের ফুল’, ‘বসুন্ধরা’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘নয়নমনি’, ‘লাঠিয়াল’ সিনেমাগুলো উল্লেখযোগ্য। তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা নার্গিস আক্তারের ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’। এরপর আর কোনো নতুন সিনেমায় দেখা যায়নি গুণী এই অভিনেত্রীকে।

কালের বিবর্তনে তিনি নায়িকা থেকে এসেছেন সিনিয়র চরিত্রে। কিন্তু অভিনয়ের গুণে এখনো তিনি অনন্য, অতুলনীয়। স্বীকৃতিস্বরূপ একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। একটানা তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াও বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি থেকে সর্বভারতীয় শ্রেষ্ঠ নায়িকার পুরস্কার পান তিনি। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ববিতা।

সমাজের অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন ববিতা। ডিসট্রেস চিলড্রেন ইনফ্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল–এর শুভেচ্ছাদূত তিনি। আজ গুণী এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। তবে জন্মদিনের এ শুভক্ষণে দেশে নেই ববিতা। কানাডায় একমাত্র ছেলে অনিকের সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন করছেন এ অভিনেত্রী।

জেডআই/

Exit mobile version