Site icon Jamuna Television

‘রোহিঙ্গাদের আদি নিবাস বাংলাদেশ’!

লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে শেখানো হচ্ছে, রোহিঙ্গারা রাখাইনে বহিরাগত, তারা চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া বাংলাদেশি’! আগামী বছরও শিক্ষার্থীদের পড়তে হবে এই লেখা। ২০১৯-এর আগে এই তথ্য সংশোধনের কোনো সুযোগ নেই।

অষ্টম শ্রেণীর পাঠ্যবই ‘সাহিত্য কণিকা’-তে ‘মংডুর পথে’ নামে একটি ভ্রমণ কাহিনী আছে। লেখক বিপ্রদাশ বড়ুয়া। ২০১২ সালের পর লেখাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এটি এখন পড়ানো হচ্ছে। লেখক বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইনের এই বাসিন্দারা বহিরাগত এবং তারা বাংলাদেশ থেকে যাওয়া।

এ প্রসঙ্গে লেখক বিপ্রদাশ বড়ুয়া বলেন, ‘আমি যখন লিখছি তখন এমনটাই জানতাম, পরে জানতে পারছি ওরা (রোহিঙ্গারা) ওখানকারই। এখন মনে হচ্ছে যখন লিখেছি, তখন ভুল লিখেছি।’

গবেষকরা বলছেন, ভ্রমণ কাহিনীটির সাহিত্যিক মান খুবই নিম্ন পর্যায়ের। রয়েছে ভাষাগত, সংস্কৃতিগত আপত্তিকর শব্দ-বাক্য। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মাদ গোলাম রব্বানি বলেন, লেখাটির বিষয়বস্তুর কোনো ঠিক নেই। অত্যন্ত বাজে লেখা। এমন একটি রুচিহীন লেখা কিভাবে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিলাম? রাখাইন একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক সত্তা। তাদের মুসলিমরাও এর অংশ। রোহিঙ্গারা রাখাইনে বহিরাগত, এ কথার ভিত্তি নেই।

এনসিটিবি’র বইটি সম্পাদনা হয় ২০১২ সালে। সেখানে নাম রয়েছে ১০ জনের। তাদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর বলেন, আমরা এনসিটিবি থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছি। তারা আমাদের সামনে রেখে তারা বহু লেখা সংযোজন, বিয়োজন করেছে, আমরা জানিই না।

আর জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড চেয়ারম্যান ভুলের দায় চাপাচ্ছেন সম্পাদনা পরিষদের ওপর। এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, এটা তো উনার (লেখকের) লেখা। আমরা ছাপাইছি বা না ছাপাইছি এটা যারা সম্পাদনা করেছে তারা বুঝবে।

এনসিটিবি বলছে, শিক্ষার্থীদের আগামী বছরও পড়ত হবে বিতর্কিত লেখাটি। কারণ এরই মধ্যে ছাপার জন্য প্রেসে পাঠানো হয়েছে বইটি।

যমুনা অনলাইন: টিএফ

Exit mobile version