মাকড়সা দেখলে আঁতকে উঠে, এমন মানুষের অভাব নেই। কোথাও মাকড়সা অথবা এর জাল আছে, এমনটা মনে হলে আতঙ্কিতও হয়ে পড়েন অনেকে। অথচ বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ হাজার প্রজাতির মাকড়সার মধ্যে বেশিরভাগই নির্বিষ।
কারও কারও এই ভীতি পরিণত হয় ফোবিয়াতে। এর পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। অনেক সময় ঘটে দুর্ঘটনাও।
মানুষের মাকড়সা ভীতি দূর করতে যুক্তরাজ্যে লন্ডন চিড়িয়াখানার উদ্যোগে আয়োজন করা হয় বিশেষ এক কার্যক্রম, যার নাম ‘ফ্রেন্ডলি স্পাইডার প্রোগ্রাম’। চার ঘণ্টার সেশনে অভিনব পদ্ধতিতে দূর করা হয় মানুষের মাকড়সা ভীতি। খবর রয়টার্সের।
লন্ডন চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা ডেভ ক্লার্ক বলেন, মাকড়সা ভীতির কারণে পরিস্থিতি এমনও হয়েছে, ভয়ে অনেকে ঘর থেকে বের হতে পারছে না। এমনকি নিজের ঘরেও এই ফোবিয়ার কারণে আতঙ্কে থাকেন কেউ কেউ। এমনও দেখেছি, কেউ একটা বাড়ি কিনে সেখানে মাকড়সা দেখে সেটি আবারও বিক্রিও করে দিয়েছে। এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা জরুরি।
চার ঘণ্টার সেশনে ভীতি দূর করতে রাখা হয় কয়েকটি ধাপ। অবচেতন মনের ভয়কে দূর করতে এই প্রাণী সম্পর্কে দেয়া হয় বিস্তর ধারণা। এরপর রয়েছে হিপনোথেরাপি। এমনকি ভীতি দূর হয়েছে কি না তা প্রমাণে মাকড়সায় ভরা কক্ষে অবস্থান এবং প্রাণীটি হাতে নেয়াসহ দিতে হয় কয়েকটি পরীক্ষাও।
কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের এই কার্যক্রমের মাধ্যমে গড়ে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯জনেরই ভয় কেটেছে।
ফ্রেন্ডলি স্পাইডার প্রোগ্রামে অংশ নেয়া একজন বলেন, সত্যিকার অর্থেই মাকড়সা আমি খুবই ভয় পাই। কোনো কক্ষে মাকড়সা দেখলে সেখানে থাকা আমার জন্য অসম্ভব ব্যাপারই ছিল। অথচ আমি এখন যেখানে আছি, সেখানে অন্তত ৬০টি মাকড়সা রয়েছে। কিন্তু আমার কোনো সমস্যাই হচ্ছে না। কীভাবে এটা সম্ভব হলো বুঝতেই পারছি না।
এতে অংশ নেয়া আরেকজন বলেন, আমি এমন এক ঘরের মধ্য আছি, যার আশপাশে মাকড়সা ঝুলছে। আমার হাতের উপর দিয়ে মাকড়সা হেঁটে চলে গেলো। আমার একটুও ভয় করেনি। বিষয়টি দেখে আমি যেমন বিস্মিত, তেমন আনন্দিতও।
লন্ডন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ মাকড়সা ভীতি দূর করতে কাজ করছে ৩০ বছর ধরে। অবশ্য এর জন্য প্রত্যকেকে গুণতে হয় দেড়শ ইউরো।
/এমএন

