Site icon Jamuna Television

মিয়ানমারের যুদ্ধাবস্থার কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত

নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। সরকারের মানবিকতায় সাময়িকভাবে এদেশে থাকার অনুমতি দেয়া হয় তাদের। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় প্রত্যাবাসনের। নানামুখী কূটনৈতিক তৎপরতায় তৈরি হয় সেই সুযোগও।

কিন্তু রাখাইন রাজ্য দখলে নিতে গত ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ-ই মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিদ্রোহীরা। বদলে যায় পুরো পরিস্থিতি। রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, চলমান সংঘাতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রোহিঙ্গারা। একদিকে বাস্তুচ্যুতদের ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা যেমন বন্ধ হয়েছে; অপরদিকে দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আরো অনেকে।

অনেকটা রোহিঙ্গা নেতাদের সুরেই কথা বলছে শরনার্থী প্রত্যাবাসন কমিশন। মিয়ানমারের যুদ্ধাবস্থা পরিস্থিতি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

আরআরআরসি-এর কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেছেন, মিয়ানমারের সরকারের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। সাম্প্রতিক সময়ে বাস্তবতা তৈরি হয়েছে যে রাখাইন রাজ্যে সংঘাত হচ্ছে, আরাকান আর্মির সাথে সরকারি বাহিনীর যুদ্ধ চলছে। সে কারণে এই মুহূর্তে আলোচনার টেবিলে বসার জন্য চাপ-ও দেয়া যাচ্ছে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমারের বিদ্রোহী-সামরিক জান্তার দখল-পাল্টা দখলের লড়াই এখন আর কেবল দুটি পক্ষের হাতে নেই। তাই খুব সহসাই পরিস্থিতি উন্নতির সম্ভাবনাও ক্ষীণ।

শরণার্থী বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির বলেন, একাধিক গোষ্ঠী যখন সংঘাতপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে এবং বিভিন্ন মুখী যখন তাদের স্বার্থ, তখন আসলে রোহিঙ্গাদের স্বার্থ তাদের দিক থেকে গৌণ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও রোহিঙ্গারা-ও তাদেরকে খুব একটা বিশ্বাস করেনা। বাস্তবে কোন পক্ষকেই তারা এখন বিশ্বাস করতে পারছে না এবং সেটার যৌক্তিক কারণ-ও আছে। সেখানে বর্তমানে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। এমন সময়ে, সেখানে যদি কোন প্রকার স্থিতিশীল অবস্থা তৈরি না হয়, তাহলে রোহিঙ্গাদের সেখানে যাওয়া প্রশ্নেই আসেনা। সেক্ষেত্রে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আরও অনিশ্চিত জায়গায় চলে গেছে।

এত এত সমস্যার মাঝেও, নিজ ঘরে ফিরতে পারলেই যেন বাঁচে দেশান্তরী মানুষরা।

/এআই

Exit mobile version