Site icon Jamuna Television

মেক্সিকোতে স্বাধীনতা দিবসের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত

স্বৈরাচার উৎখাতে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে সংগঠিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে উজ্জ্বীবিত আশার প্রতীক বলে মন্তব্য করেছেন মেক্সিকোতে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) মেক্সিকো সিটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ৫৪তম স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মুশফিক এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেক্সিকো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের মহাপরিচালক ফার্নান্দো গনজালেজ সাইফি। এছাড়াও মেক্সিকোতে অবস্থানরত ৫০টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশনপ্রধান, রাজনীতিক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রদূত মুশফিক তার বক্তব্য বলেন, ২৬ মার্চ প্রতিটি বাংলাদেশির হৃদয়ে মর্যাদার জায়গা দখল করে রয়েছে। এই দিন থেকে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা হয়েছিলো। জনগণের মুক্তির সেই সংগ্রামে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জন্ম হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের।

তিনি বলেন, এ যুদ্ধটা শুধু বিদেশি শক্তির অধীনতা থেকে মুক্তির যুদ্ধ ছিল না, বরং এ যুদ্ধটা ছিলো শোষণ, বৈষম্য এবং অন্যায় থেকে মুক্তি লাভের। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নের ভিত্তিটা ছিলো একটি গণতান্ত্রিক এবং সকলের অংশগ্রহণমূলক দেশ গড়ে তোলা।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান শুধু একটি বিক্ষোভ নয় বরং আমাদের উজ্জ্বীবিত আশার প্রতীক। এই আশাকে বাস্তবে রুপ দিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাহস এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, পুলিশ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই—এই প্রধান বিষয়গুলোর সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।

দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত মুশফিক বলেন, কার্যকর সিদ্ধান্ত এবং বাংলাদেশের সাহসী জনগণের কারণে দেশের অর্থনীতি এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পাচ্ছে, এবং বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ভিত্তি সুদৃঢ় হচ্ছে। এটা খুব গর্বের বিষয় যে এই মুহূর্তে ঢাকায় বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে যেখানে ৫০-এর অধিক দেশের ৬ শতাধিক বিনিয়োগকারী বাংলাদেশের তাদের বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাই করছেন।

মেক্সিকোর সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রদূত মুশফিক বলেন, আমরা যখন ভবিষ্যত বিনির্মাণের পথে হাঁটছি , ঠিক তখন মেক্সিকোর সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব আলাদ গুরুত্ব তৈরি করছে। চলতি বছর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি পূর্ণ হবে। এই সোনালী মাইলফলককে উদযাপন করতে বাংলাদেশ মেক্সিকোতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক এবং কূটনৈতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে এ বছরের শেষ দিকে মেক্সিকোতে বাংলাদেশের ৩য় ফরেন কনস্যুলার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

এদিকে, মেক্সিকো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ফার্নান্দো গনজালেজ সাইফি তার বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং জনগণকে স্বাধীনতা দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক গভীর করার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। এ বছর আমরা কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী পালন করবো।

এছাড়াও তিনি দুই দেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি মনোমুগ্ধকর করে তুলে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সি এবং তার মেয়ে রোদেলার দ্বৈত পারফরম্যান্স। তিনি বাংলা, ইংরেজির পাশাপাশি স্প্যানিশ ভাষায় গান গেয়ে সবাইকে মুগ্ধ করে তোলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে দলীয় নৃত্যের আয়োজন করা হয়।

/এআই

Exit mobile version